বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে শুরু হচ্ছে ‘পঞ্চম স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি’। এই কর্মসূচির মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা, যা দেশের ইতিহাসে স্বাস্থ্য ও পুষ্টিখাতের সবচেয়ে বৃহৎ প্রকল্প।
এ প্রকল্পের ব্যয়ের ৮০ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা সরকারি খাত থেকে আসবে, এবং ১১টি উন্নয়ন সহযোগী মেগা কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ২৫ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা প্রকল্প ঋণ হিসেবে প্রদান করবে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ইতোমধ্যে প্রকল্পের প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে আগামী ছয় বছরে এটি দেশের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির উন্নয়নে একটি বড় অবদান রাখবে।
পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের প্রধান মো. আব্দুর রউফ বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠিয়েছে এবং আমরা যাচাই-বাছাই করছি। কিছু পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ করা হয়েছে, যা স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সংশোধন করে পাঠাবে।’’
প্রস্তাবিত কর্মসূচিতে ২৫ হাজার ৪১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা উন্নয়ন সহযোগীদের থেকে আসবে, যার মধ্যে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঋণ প্রদান করবে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহ্ মো. হেলাল উদ্দীন জানিয়েছেন, ‘এটি স্বাস্থ্য-পুষ্টিখাতের জন্য একটি বিশাল প্রকল্প, যা আমাদের জন্য একটি বড় অর্জন।’
বর্তমানে চলমান চতুর্থ সেক্টর কর্মসূচি জুন ২০২৪-এ শেষ হবে এবং এর পর পঞ্চম স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে। এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বিক সমন্বয়ের কাজ চলছে।
এই কর্মসূচির আওতায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ২৩টি অপারেশনাল প্ল্যানের ব্যয় ৬৬ হাজার ৪৯১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ১৫টি অপারেশনাল প্ল্যানের ব্যয় ৩৯ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা হবে।
প্রধান কার্যক্রমগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, পুষ্টি সেবা, প্রশিক্ষণ, ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন, তথ্য ব্যবস্থাপনা, মনিটরিং ও গবেষণা।
এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকার ৭৬ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং উন্নয়ন সহযোগীরা ২৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ অর্থায়ন করবে, যা পূর্ববর্তী চতুর্থ সেক্টর কর্মসূচির তুলনায় ৫৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।