বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আজ বৃহস্পতিবার শহীদি মার্চের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক মাস পূর্তি উদযাপন করেছে। কর্মসূচি চলাকালে পাঁচটি দাবি প্রকাশ করা হয়েছে। রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ দাবি উপস্থাপন করেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার।
পাঁচটি দাবি হলো—এক. গণহত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা। দুই. শহীদ পরিবারের জন্য আর্থিক ও আইনি সহায়তা দ্রুত প্রদান করা। তিন. প্রশাসনে দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টদের সহযোগীদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে বিচার করা। চার. গণভবনকে জুলাই স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে ঘোষণা করা এবং পাঁচ. রাষ্ট্র পুনর্গঠনের একটি রোডম্যাপ দ্রুত প্রকাশ করা।
শহীদি মার্চ কর্মসূচিতে বক্তৃতা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, আব্দুল কাদের এবং গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আখতার হোসেন। বক্তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের আদর্শ অনুসরণ করে কাজ করার আহ্বান জানান।
সারজিস আলম বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান থেকে অর্জিত দ্বিতীয় স্বাধীনতা এবং তার রক্ত ও স্পিরিট মূল্যবান। এখনও অনেক ফ্যাসিস্টের উপস্থিতি রয়েছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, স্বাধীন বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট আচরণের চেষ্টা করবেন না। এই দেশে কোনো চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেটের স্থান নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ভাইদের রক্তের মূল্য দিতে প্রস্তুত। তাঁরা যাদের জন্য নিজেদের জীবন দিয়েছেন, আমরা নিজেদের রক্ত দিয়ে হলেও তাঁদের রক্তের দাম দেব।’
শেখ হাসিনার পতনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘শহীদি মার্চ’-এ অংশ নিতে ঢাবির রাজু ভাস্কর্যে বিভিন্ন স্তরের মানুষ জড়ো হন। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শ্রমিকসহ সবাই মিছিল নিয়ে যোগ দেন। ঢাবির বিভিন্ন হল, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা এবং স্কুলের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হন। কর্মসূচির সময়, শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের পতাকা এবং শহীদদের ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড বহন করেন। শহীদি মার্চ রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ডা. সাদিক জানান, ‘আগে আমাদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ছিল না। এখন আমরা স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারি। যাদের আত্মত্যাগে এই স্বাধীনতা পেয়েছি, তাঁদের স্মরণ করতে এসেছি।’
ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ইমন বিচার দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘যারা জুলাইয়ে গণহত্যা চালিয়েছেন, তাঁদের বিচার হওয়া উচিত।’
বারিধারার জামিয়া মাদানিয়া মাদ্রাসার ছাত্র হাফেজ শহীদুল বলেন, ‘যারা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া প্রয়োজন। শহীদের সম্মান রক্ষা করতে হবে।’