ঢাকাশনিবার , ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  1. আন্তর্জাতিক
  2. কারিগরি
  3. ক্যাম্পাস
  4. খেলাধুলা
  5. জব কর্নার
  6. দেশ-বিদেশ
  7. প্রাথমিক
  8. বিনোদন
  9. বিবিধ
  10. বিশ্ব-বিদ্যালয়
  11. মতামত
  12. মাদ্রাসা
  13. মাধ্যমিক
  14. শিক্ষা
  15. শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মাঙ্কিপক্সের বিস্তার ঠেকাতে কঠোর সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান

shikshabatayon
সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪ ৪:০৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মাঙ্কিপক্স, বা এমপক্স, একটি সংক্রামক বসন্ত রোগ যা মাঙ্কিপক্স ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট। এই ভাইরাস একটি ডিএনএ ভাইরাস এবং মূলত প্রাণী থেকে মানবদেহে সংক্রমিত হয়, বিশেষ করে ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মাধ্যমে যেমন ইঁদুর। যদিও মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলেও ভাইরাস মানবদেহে প্রবেশ করতে পারে, বিশেষ করে শ্বাসনালি, শরীরের ক্ষত, নাক বা চোখের মাধ্যমে। আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কেও সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে।

মাঙ্কিপক্স ভাইরাস পক্সভিরিডি পরিবারের অর্থোপক্সভাইরাস গণের অন্তর্গত, যা গুটিবসন্ত সৃষ্টিকারী ভ্যারিওলা ভাইরাস, গোবসন্ত সৃষ্টিকারী কাউপক্স ভাইরাস, এবং গুটিবসন্তের ভ্যাকসিন তৈরিকারী ভ্যাকসিনিয়া ভাইরাসের আত্মীয়। মাঙ্কিপক্সের দুটি উপপ্রজাতি রয়েছে: মধ্য আফ্রিকা ক্লেড, যা মৃত্যুহার ১০% পর্যন্ত হতে পারে, এবং পশ্চিম আফ্রিকা ক্লেড, যা সাধারণত মৃত্যুর ঘটনা সৃষ্টি করে না। গুটিবসন্ত পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে এবং জলবসন্তের মৃত্যুহার খুব কম।

মাঙ্কিপক্স নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে, বিশেষ করে নিকটবর্তী দেশগুলোতে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব দেখে। অনেকেই ভুল করে মাঙ্কিপক্সকে চিকেনপক্স মনে করেন, যেহেতু মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ চিকেনপক্সের সঙ্গে কিছুটা মিল রয়েছে। তবে দুইটি ভাইরাসঘটিত রোগ হলেও, তাদের সংক্রমণ ও ভাইরাসের ধরন আলাদা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট আবারও মাঙ্কিপক্স নিয়ে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। ২০২২ সালের জুন মাসে প্রথমবারের মতো বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছিল।

আফ্রিকার বাইরে ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ এশিয়া, এবং মধ্যপ্রাচ্যে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়েছে। ২০২৪ সালের শুরু থেকে জুলাই পর্যন্ত ১৪,৫০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৪৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে ১১-১৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

১৯৫৮ সালে প্রথম মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়, যখন এটি ডেনমার্কে গবেষণাগারে বানরের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে প্রমাণিত হয় যে, এই রোগের মূল বাহক হলো বিশেষ ধরনের ইঁদুর। ১৯৭০ সালে কঙ্গোতে মানুষের মধ্যে প্রথম মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ ঘটে। শুরুতে এটি আফ্রিকার কয়েকটি দেশে সীমাবদ্ধ ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ে। ২০২২ সাল থেকে বিভিন্ন দেশে দেখা গেছে মাঙ্কিপক্স, যারা আফ্রিকা ভ্রমণ করেননি বা আফ্রিকার প্রাণীর সংস্পর্শে আসেননি।

মাঙ্কিপক্সের শনাক্তকরণের জন্য রক্ত ও লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সুপ্তিকাল সাধারণত ৬-১৩ দিন, কিন্তু ৫ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত হতে পারে। সংক্রমণ হলে প্রথমে জ্বর, মাথাব্যথা, অবসাদ, এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা দেখা দেয়। পরে ত্বকে গুটি, ফুসকুড়ি বা লাল দাগ দেখা যায়, যা ধীরে ধীরে ক্ষত হয়ে পড়ে। আক্রান্ত ব্যক্তি সাধারণত একবার মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হলে পুনরায় আক্রান্ত হয় না। ভাইরাসটি দেহে দীর্ঘমেয়াদী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হওয়ার পর সাধারণত ২-৪ সপ্তাহ সময় লাগে পুরোপুরি সুস্থ হতে।

মাঙ্কিপক্সের কোনো নির্দিষ্ট টিকা না থাকলেও, গুটিবসন্তের টিকা ৮৫% কার্যকর। গুটিবসন্তের টিকার সরবরাহ সীমিত হলেও, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভ্যাকসিন উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মাঙ্কিপক্সের চিকিৎসা লক্ষণ অনুযায়ী করা হয় এবং কিছু অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ যেমন ব্রিনসিডোফোভির ও টেকোভিরিমাট ব্যবহারে তীব্রতা কমানো সম্ভব।

মাঙ্কিপক্সের বিস্তার রোধে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন, যেমন আক্রান্ত বা সন্দেহভাজন ব্যক্তির সংস্পর্শে না আসা, মাস্ক ব্যবহার করা, নিয়মিত হাত ধোয়া, এবং আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত দ্রব্যাদি জীবাণুমুক্ত করা। গৃহপালিত প্রাণী থেকে মাঙ্কিপক্স ছড়ায় না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ দেখা দিলে হটলাইন নম্বর ১৬২৬৩ বা ১০৬৫৫ নম্বরে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছে।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।