মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে কোকা-কোলা ও পেপসিকো সম্প্রতি ব্যাপক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। কয়েক দশক ধরে এই দুই প্রতিষ্ঠান ব্যাপক ব্যবসা করে আসছিল, কিন্তু গাজা যুদ্ধের পর তারা এই দেশগুলোতে ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে কোকা-কোলা এবং পেপসির ব্যবসা মুসলিম দেশগুলোতে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে, কারণ অনেক দেশে ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের প্রতি প্রতিবাদ হিসেবে এই কোম্পানির পণ্য বয়কট করা হচ্ছে।
কোকা-কোলার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করছে, তার একটি অংশ কোকা-কোলার মাধ্যমে আসছে। যদিও কোকা-কোলা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে, তবুও এই অভিযোগের প্রভাব ব্যবসার ওপর পড়ছে। পেপসিকোও একই ধরনের অভিযোগের মুখে রয়েছে।
মিশরে, চলতি বছরে কোকা-কোলার ব্যবসা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, আর স্থানীয় ব্র্যান্ড ভিসেভেনের বিক্রি তিনগুণ বেড়ে গেছে। বাংলাদেশে একটি বিতর্কিত বিজ্ঞাপন তৈরির পর কোকা-কোলার বাজারের ক্ষতি হয় এবং স্থানীয় কোমল পানীয় ব্র্যান্ড মোজোর বিক্রি বৃদ্ধি পায়।
পেপসিকোর ব্যবসায়ও গাজা যুদ্ধের পর মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ব্যাপক ধস নেমেছে। ২০২৩ সালে আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে পেপসিকোর মোট আয় কমে দাঁড়িয়েছে ৬০০ কোটি ডলারে, যা ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চলে আয় ৮০০ কোটি ডলার থেকে কম।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, কোকা-কোলা ও পেপসির আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা কঠিন। তবে, পাকিস্তান ও মিশরে স্থানীয় কোমল পানীয় ব্র্যান্ডগুলোর বিক্রি বেড়েছে। এটি ইসরায়েল বিরোধী বয়কট আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যা পূর্বে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদের বিরুদ্ধে এবং অন্যান্য সময়ে বিভিন্ন প্রতিবাদে দেখা গিয়েছে।
পেপসিকো সিইও র্যামন লাগুয়ার্তা বলেছেন যে কিছু ভোক্তা রাজনৈতিক কারণে বিকল্প পণ্য বেছে নিচ্ছেন, বিশেষ করে লেবানন, পাকিস্তান ও মিশরের মতো দেশে। কোকা-কোলা এবং পেপসিকো উভয়ই দাবি করেছে যে তারা ইসরায়েল বা কোনো সামরিক অভিযানে অর্থায়ন করে না।