রাঙ্গামাটি শহরটি চারটি প্রধান বাজারের কেন্দ্রবিন্দু, যেখানে পাহাড়ের বাসিন্দারা তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনার জন্য আসেন। সাম্প্রতিক সহিংসতার কারণে গত তিন দিন এই বাজারগুলো কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে, ফলে ব্যবসায়ীরা ৫০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ক্ষতির পরিমাণ ভবিষ্যতে শতকোটিরও বেশি হতে পারে।
রাঙ্গামাটির প্রধান বাজার রনরূপা। শুক্রবার এখানে সহিংসতার শুরুতে দুর্বৃত্তদের হামলায় বনরূপা ও আশপাশের অন্তত ১০০ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৫০টির বেশি অস্থায়ী দোকান ভেঙে গেছে।
বনরূপা বিএম শপিং কমপ্লেক্সের সাধারণ সম্পাদক এম এস জাহান লিটন জানিয়েছেন, এই বাজারে প্রায় ৩,০০০ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার মধ্যে অনেকের ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে। ১৪৪ ধারা জারির ফলে তিন দিন বাজারের কার্যক্রম সম্পূর্ণ অচল ছিল।
অন্যদিকে, তবলছড়ি বাজারে হামলার ঘটনা ঘটেনি, তবে ব্যবসায়ীরা নৌপথের মাধ্যমে কাঁচামাল না আসার কারণে বেচাকেনা বন্ধ হয়ে যায়। তবলছড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইকবাল করিম জানান, সাপ্তাহিক বাজারের দিনেও ক্রেতা-বিক্রেতা কিছুই ছিল না।
পর্যটন ব্যবসাও মারাত্মক বিপর্যয়ের সম্মুখীন। রাঙ্গামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সে ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত ৬০টি রুমের সব বুকিং ছিল, কিন্তু সংঘাতের কারণে সব বুকিং বাতিল হয়ে যায়। এতে প্রতিদিন ৪ লাখ টাকার ক্ষতি হচ্ছে, যা আগামী ১৫ দিনে ৫০ লাখ টাকায় পৌঁছাতে পারে।
হোটেল ও মোটেলগুলোর অবস্থাও সংকটাপন্ন। গ্রান্ড মাস্টার হোটেলের মালিক শাহিন আল মামুন জানান, অতিথির অভাবে প্রতিদিন ২০ হাজার টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
মৌসুমি ফল ব্যবসায়ীদের জন্যও পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। সংঘর্ষ ও অবরোধের কারণে প্রায় দুই কোটি টাকার পণ্য নষ্ট হয়েছে।
রোববার ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার হলেও শহরের পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। পরিবহন ব্যবস্থা ধীরগতিতে সচল হচ্ছে, কিন্তু বাজারের অস্থিরতা কাটেনি।