পরিকল্পনা কমিশন শিক্ষাখাতে ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছে, যার মধ্যে রয়েছে:
1. প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষক নিয়োগের অভাব।
2. প্রাথমিক স্তরে ঝরে পড়ার হার** (প্রায় ১৩.৯৫%)।
3. মাধ্যমিক শিক্ষায় ভর্তি কম হওয়া।
4. মানসম্মত শিক্ষকের সংকট।
5. ধনী-গরিবের মধ্যে ভর্তির পার্থক্য।
6. মাদরাসা শিক্ষার মান চাকরির বাজারের সাথে অসামঞ্জস্য।
7. কওমি মাদরাসার অনিয়ন্ত্রিত পরিচালনা।
এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় প্রথমবারের মতো একটি অ্যাকশন প্ল্যানের খসড়া তৈরি করা হয়েছে, যা শিগগিরই অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
অন্য চ্যালেঞ্জগুলোতে উচ্চ শিক্ষায় সরকারি কলেজে একই শিক্ষক দ্বারা উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা দেওয়া, শিক্ষকের অভাব, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাতের সমস্যা, পদোন্নতির জন্য একক নীতিমালার অভাব, এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাস্টিদের মালিকানা ধারণা অন্তর্ভুক্ত।
প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রউফ জানান, বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় উন্নয়ন হয়েছে, তবে গুণগত মানের সমস্যা রয়ে গেছে। প্রতিবেশী দেশগুলো পরিকল্পনা তৈরি করে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে, এবং আমাদের দেশেও অ্যাকশন প্ল্যান প্রস্তুতির কাজ চলছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে চলতি অর্থবছরে ১ লাখ ১১ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের খসড়ায় বলা হয়েছে, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার জন্য আলাদা অবকাঠামো নেই, ফলে অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে আগ্রহী নয়।
এছাড়া, প্রাথমিক শিক্ষায় ভর্তির হার শতভাগ হলেও মৌলিক দক্ষতা অর্জনে শিশুদের ব্যর্থতার হার বেশি। মাধ্যমিক শিক্ষায় কম ভর্তি হওয়া, শিক্ষক সংকট এবং অভিভাবকদের অসংযোগিতা মানসম্মত শিক্ষার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাদরাসা শিক্ষার মান চাকরির বাজারের সাথে প্রাসঙ্গিক নয় এবং কওমি মাদরাসাগুলো সরকারী নিয়ন্ত্রণ ছাড়া চলে। উচ্চ শিক্ষায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর অধীন কলেজগুলোও আলাদা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। উপানুষ্ঠানিক ও কারিগরি শিক্ষায় উন্নয়ন জরুরি।