ঢাকারবিবার , ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  1. আন্তর্জাতিক
  2. কারিগরি
  3. ক্যাম্পাস
  4. খেলাধুলা
  5. জব কর্নার
  6. দেশ-বিদেশ
  7. প্রাথমিক
  8. বিনোদন
  9. বিবিধ
  10. বিশ্ব-বিদ্যালয়
  11. মতামত
  12. মাদ্রাসা
  13. মাধ্যমিক
  14. শিক্ষা
  15. শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বন্যার কারণে শিক্ষার ক্ষতির আশঙ্কায় অভিভাবকরা

shikshabatayon
সেপ্টেম্বর ১, ২০২৪ ১:৪৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঢাকাঃ ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ জুলাই থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই আন্দোলনের ফলস্বরূপ আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু এরপর কয়েকটি জেলা ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সেখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে। পানি কমতে শুরু করায় কিছু মানুষ তাদের বাড়িতে ফিরে গেছেন, তবে অনেকেই এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন। বন্যায় হাজার হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে এবং বইপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে অভিভাবক ও শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা সন্তানদের শিক্ষাজীবন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্রামপর্যায়ে যাদের বইপত্র নষ্ট হয়েছে, তাদের জন্য স্কুলগুলোকে তালিকা প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তালিকা হাতে পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে পাঠদান স্বাভাবিক করা হবে।

বন্যার কারণে ২০ আগস্ট থেকে ফেনীর ৯২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে। এই অবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী বেলাল হোসেন বলেন, ‘বন্যায় আমাদের ঘরবাড়ি সব ডুবে গেছে এবং বইপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এক সপ্তাহ আত্মীয়ের বাড়িতে থাকার পর বাড়িতে গিয়ে দেখি, সব বইখাতা ভিজে গেছে।’

ফুলগাজী উপজেলার জগতপুর গ্রামের বাসিন্দা আলী হোসেন বলেন, ‘বন্যার কারণে আমাদের ঘরবাড়ি, কৃষিজমি, গবাদিপশু—সবকিছুই শেষ হয়ে গেছে। ছেলেমেয়েদের বইপত্রও নষ্ট হয়ে গেছে, তারা পড়াশোনা থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। স্কুল খুললে নতুন বই দিলে ছেলেমেয়েরা আবার পড়াশোনা শুরু করতে পারবে।’

ফেনী পৌরসভার সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চয়নিকা চৌধুরী বলেন, বন্যায় স্কুলভবন পুরোপুরি তলিয়ে গিয়েছিল। শ্রেণিকক্ষ ব্যবহারের জন্য অনুপযোগী হয়ে আছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রোববার (আজ) থেকে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-চাঁদপুরে শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি কম

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া ও কসবায় বন্যার পরিস্থিতির উন্নতির পর শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে ফিরতে শুরু করেছে, তবে এখনও শতভাগ উপস্থিতি হয়নি বলে জানা গেছে। বন্যায় আখাউড়ার ৩৫টি ও কসবার ২৬ গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। ফলে এসব এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

 

নোয়াখালীর ১৫০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র

 

নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ায় জেলার হাতিয়া উপজেলা ছাড়া বাকি ৮টি উপজেলা ও ৭টি পৌরসভার প্রায় দেড় হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এখানে আশ্রয় নিয়েছেন ৩ লাখেরও বেশি মানুষ। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এসব প্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু হবে।

 

লক্ষ্মীপুরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার্তদের আশ্রয়, পাঠদান ব্যাহত

বন্যার পানিতে স্কুলের মাঠ তলিয়ে গেছে এবং স্কুলের আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। কয়েক হাজার মানুষ এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছেন। এই কারণে পাঠদান শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। সিলেবাস শেষ করা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে এবং অভিভাবকরাও সন্তানদের পড়াশোনা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল লতিফ মজুমদার বলেন, ‘বন্যায় ৬০০টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাঠে কোমরপানি এবং শ্রেণিকক্ষে পানি উঠেছে। বন্যার্তরা স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়ের তথ্য ও মেরামতের বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখেছি।’ বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলের আসবাবপত্র, ওয়াশ ব্লক, মাঠ যথাসময়ে সংস্কার করা না হলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

 

কুমিল্লায় বন্ধ ১৭৮৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন

কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতির কারণে ১ হাজার ৭৮৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এর আগে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্যও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এই কারণে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

নগরীর রেসকোর্স এলাকার বাসিন্দা কামাল উদ্দিন সরকার বলেন, ‘আমার বড় ছেলে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিল, কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে পরীক্ষা বারবার পেছাতে পেছাতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে।’

জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ফয়জুন্নেছা সীমা বলেন, ‘কয়েক দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা সিলেবাস অনুযায়ী পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়েছে। আমরা চেষ্টা করব ক্ষতি পুষিয়ে তুলতে, তবে কতটা পারা যাবে তা জানা নেই।’

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।